এ্যানি চন্দ্র:
আজ হিন্দু ধর্মালম্বীদেও শুভ অক্ষয় তৃতীয়া। অক্ষয় তৃতীয়া হল চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লাপক্ষের তৃতীয়া তিথি। হিন্দু ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এই তিথি। বৈদিক বিশ্বাসানুসারে এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। এই শুভদিনে জন্ম নিয়েছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম। বেদব্যাস ও গনেশ এই দিনে মহাভারত রচনা আরম্ভ করেন। মূলত এপ্রিলের শেষে ও মে মাসের প্রথমে এই শুভ তিথি পালন করা হয়।
বুধবার (১৮ এপ্রিল) আজ অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষে নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অক্ষয় তৃতীয়াতে হিন্দুধর্মালম্বীরা উপোস করে মন্দিরে গিয়ে পূজা করে থাকেন। এই পূজাতে সিদুঁর, পঞ্চগুঁড়ি, পঞ্চগর্ব্য, তিল, হরিতকী, ফুল, দুর্ব্বা, তুলসি, বিল্বপত্র, ধূপ, প্রদীপ, ধূনা, মধুপর্ক বাটি , দই, মধু, চিনি, ঘি, পুজোর জন্য কাপড়, শাটী, নৈবেদ্য, কুচো নৈবেদ্য, সভোজ্য জলপূর্ণ ঘট, বস্ত্র, পাখা, দক্ষিণা এসব উপকরন দিয়ে পূজা করেন। তারপর যজ্ঞ করে পূজা সম্পন্ন করা হয়।
হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থমতে, এদিন অনেকগুলি তাৎপর্যপূর্ন ঘটনা ঘটেছিল। এদিনই রাজা ভগীরথ গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন। এদিনই গণপতি গনেশ বেদব্যাসের মুখ নিঃসৃত বাণী শুনে মহাভারত রচনা শুরু করেন। এদিনই দেবী অন্নপূর্ণার আবির্ভাব ঘটে। এদিনই সত্যযুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়। এদিনই দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে যান এবং সখী কৃষ্ণাকে রক্ষা করেন শ্রীকৃষ্ণ। শরনাগতের পরিত্রাতা রূপে এদিন শ্রী কৃষ্ণা দ্রৌপদীকে রক্ষা করেন।
হিন্দৃধর্মালম্বীরা বিশ্বাস করেন যে, এই দিনটি এত শুভ যে এই দিনে যা কিছুই করা হোক না কেন তা খারাপ ফলাফল দিতে পারে না। এই দিনে একটি ভাল কাজ করা পুণ্যের। এই দিনে পূজা এবং হোমযজ্ঞ ভক্তদের জন্য দশগুণ ফল প্রদান করে। স্বর্ণ, নতুন বাড়ি কেনা, ভূমি এবং যানবাহন কেনাকাটা মঙ্গলজনক বলে মনে করা হয়।
হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ্যমতে, অক্ষয় তৃতীয়াতে যেকোন শুভ কাজ শুরু করা ভালো। এদিনের তিথির বিশেষত্ব হচ্ছে এদিন যে কাজ করা হোক না কেন তার ফল হয়ে দাঁড়ায় অক্ষয়।